মোঃ আখতার হোসেন হিরন :
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার বিভিন্ন এলাকায় খুন,ধর্ষণ,চুরিসহ নানা রকম অপরাধ কর্মকান্ড বেড়েই চলেছে। রাত হলেই সলঙ্গা থানা সদরের ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন এলাকার জনমনে যেন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে।তবে থানা পুলিশ জানিয়েছেন,খুন,ধর্ষণ,চুরি প্রতিরোধে সর্বদাই কাজ করে যাচ্ছে থানা পুলিশ। সম্প্রতি থানার বিভিন্ন ইউনিয়নে একের পর এক কয়েকটি খুনের ঘটনায় সলঙ্গায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে সাধারণ জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বেশ কিছুদিন হল থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে একের পর এক ঘটছে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড।ফলে রাত হলেই সবার মনে খুন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে।
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কয়েকটি খুন ও অপরাধমূলক ঘটনার মধ্যে ছিল,গত সেপ্টেম্বর মাসে ধুবিল ইউপির আমশড়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের চারটি গরু ও আব্দুল মালেকের ২ টি গরু চুরি হয়।থানায় জিডি করলেও আজ পর্যন্ত তার কোন কিছুই হয়নি। ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে রামকৃষ্ণপুর ইউপির মাহমুদপুর গ্রামের কৃষক জিল্লুর রহমানের গোয়াল ঘরের ১০টি গরুই চুরি হয়। ঐ দিনই শোকে গরুর মালিক স্ট্রোক করে আজ পর্যন্ত সে ঘরে পড়ে আছে। রাত জেগে পাহারা দিচ্ছে গরুর মালিকরা। গত ৬ সেপ্টেম্বরে অলিদহ গ্রামে আফরিন জাহান যুথি নামে এক স্কুল ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশটি নিয়ে গুঞ্জন চললেও পরিবারের পক্ষ হতে আত্মহত্যা বলে জানানো হয়। অক্টোবরে এরান্দহ চার মাথায় শাজাহান আলীর ২ টি গরু চুরি হয়। অলিদহ গ্রামের অটো ভ্যান চালক আমিনুল ইসলাম গত ৫ আগস্ট জীবিকার তাগিদে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। গত ১৮ অক্টোবর পাশের চকনিহাল গ্রামের ডোবা থেকে হাড়-গোড় উদ্ধার করে পুলিশ। পরে আমিনুলের মা তার ছেলের প্যান্ট ও জামা দেখে মৃত দেহ সনাক্ত করে।গত 8 অক্টোবর অজানা লোকের হাতে খুন ও ধর্ষিত হয় জীবনপুর গ্রামের জাকারিয়ার মেয়ে স্কুল ছাত্রী মিম (১৩)। আঙ্গারু এলাকা থেকে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে। ১১ অক্টোবর ভোরে সলঙ্গা হাইস্কুল সংলগ্ন পুকুরপাড় হতে আন্না রানী (৩৮) নামে এক গ্রাম পুলিশের শ্বাসরোধে হত্যা লাশ উদ্ধার হয়। অপরদিকে গত ২২ অক্টোবর রাতে চকবুরু-ভেংড়ি গ্রামে ঘটে এক হৃদয় বিদারক ঘটনা।নেশার টাকা না পেয়ে শতবর্ষী নারীকে কুপিয়ে খন্ডিত করে নেশাগ্রস্ত নাতী সজীব (২২)। এছাড়াও ১২ নভেম্বর সকালে সাহেবগঞ্জের ফুলজোড় নদী হতে হাত-পা বাঁধা ক্ষতবিক্ষত ভাসমান এক গরু ব্যবসায়ীর লাশ পুলিশ উদ্ধার করে। লাশটি একই থানা নলকার চর ফরিদপুর গ্রামের আমিনুলের পুত্র আব্দুল লতিফ খতিব (৩৫) বলে সনাক্ত হয়। ৩০ আগস্ট টাকার লোভ দেখিয়ে ১০ বছরের শিশুকে ধর্ষণ করে ৭০ বছর বয়সী আব্দুস সামাদ। ঘটনাটি ঘটে, হাটিকুমরুল ইউপির মাসুয়াকান্দি গ্রামে। ২৪ সেপ্টেম্বর হাটিকুমরুল চড়িয়া শিকার মাঠপাড়ায় ৫ বছরের শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টা চালায় একই এলাকার ধর্ষক হাবিবুর রহমান (৭০)। এমন অপরাধমূলক ঘটনা অহরহই ঘটছে সলঙ্গা এলাকায়।উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন হলেও সলঙ্গা থানা পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়নি। তবে ডিবি পুলিশের সফল অভিযানে উল্লেখিত হত্যাকাণ্ডের অনেক আসামি গ্রেফতার হয়েছে বলে জানা যায়। পুলিশের টহল ব্যবস্থা জোরদার না থাকায় সলঙ্গায় খুন,ধর্ষণ,চুরি যেন থামছেই না। সিরাজগঞ্জের নবাগত পুলিশ সুপার মহোদয়ের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন সলঙ্গার সচেতন মহল।