স্টাফ রিপোর্টার
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বিভিন্ন বাজারে রাস্তার পাশে শ্রমিকের হাটগুলো ভোরের আলো ফোটার আগেই জমে উঠে। মুখরিত হয় জীবিকার জন্য কাজ খুঁজতে আসা মানুষের আনাগোনায়। প্রতিদিন ভোর থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত এ হাট বসে উপজেলার খালকুলা, মহিষলুটি, মান্নান নগর এলাকায়। এখানে কেনাবেচা হয় মানুষের শ্রম তাও আবার পণ্যের মতো দর-কষাকষি করে। উপজেলর বিভিন্ন এলাকা থেকে এ হাটে আসেন নানা বয়সের শ্রমজীবী মানুষ। শ্রমিক খুঁজতে আসা কৃষকরাও হাটে এসে পেয়ে যান তাদের কাজের জন্য উপযুক্ত শ্রমিক।
সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের পাশে নানা বয়সের শ্রমজীবী মানুষ। তাদের কারও হাতে ব্যাগ, কারও হাতে কৃষি কাজের উপকরণ, আবার কেউ কেউ আছেন খালি হাতে। বাজারের বেশিরভাগ জায়গাজুড়ে শ্রমিকরা কাজের অপেক্ষা করছেন। হাটে উঠা শ্রমিকরা কেউ এখানকার স্থানীয় বাসিন্দা আবার কেউবা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছেন। কৃষক ও শ্রমিকদের মধ্যে চলে শ্রমের দরকষাকষি। উভয়ে দরদামে সন্তুষ্ট হলে শ্রমিক পেয়ে যাচ্ছেন কাজ আর কৃষকরা পেয়ে যাচ্ছেন কাজের মানুষ। এভাবেই চলছে শ্রম বেচাকেনা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা এ বাজারেই আসেন শ্রমিক নিতে। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নওগাঁ, সোলাপাড়া, মাগুরা বিনোদ, সগুনা, কোহিত, ভাদাস, তাড়াশ, ঘরগ্রাম, দোবিলা, বাঁশবাড়িয়া, বানিয়াবো, মহিষলুটি, মঙ্গলবাড়িয়া, কুটিগাছা, উলিপুর, সাঁকুয়া দিঘী, হামকুড়িয়া, দক্ষিণ শ্যামপুরসহ বিভিন্ন গ্রাম থেকে এসেছেন তারা। পছন্দের কাজ না পেলে অনেকে এক হাট থেকে ছুটে যান অন্য হাটে, এক মালিক থেকে অন্য মালিকের কাজে। এই সময়টাতে নিজেদের এলাকায় কাজ না থাকায় একটু বাড়তি রোজগারের আশায় তারা এ হাটে এসেছেন। সোলাপাড়া থেকে আসা শ্রমিক হোসেনআলী জানান, আমাদের এলাকায় এসময় কাজ কম। তাই কাজের সন্ধানে এ হাটে এসেছি। রসুনের মৌসুমে কাজ করে কিছু টাকা জমিয়ে আবার বাড়ি ফিরে যাব। আরেক শ্রমিক মজিদ জানান, রসুন তোলার কাজ করার জন্য এ সময় এ এলাকায় আসি। কাজ ফুরিয়ে গেলে নিজের এলাকায় ফিরে যাই। দরদামে বনাবনি হয় না তাই মাঝেমধ্যে কাজ পাই না। তবে আমাদের এলাকার তুলনায় এ এলাকায় কাজ বেশি, এজন্যই আমরা অনেকে মিলে এখানে কাজ করতে আসি।
কাছিকাটা বাজার থেকে শ্রমিক নিতে আসা কৃষক আলমগীর হোসেন জানান, আমাদের এলাকার স্থানীয় শ্রমিক এখন আর তেমন পাওয়া যায় না। দূরদূরান্ত থেকে আসা শ্রমিকদের উপরেই আমাদের ভরসা। তাই হাটে এসেছি রসুন ঘরে তোলার কাজ করানো জন্য শ্রমিক নিতে। কিছু শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেছি, দরদামে মিলে গেলে তাদের নিয়ে জমিতে যাব। স্থানীয় বাসিন্দা মো. ছাইফুল ইসলাম জানান, এ হাটে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে দিন মজুরেরা আসেন কাজের খোঁজে। শ্রমিক খোঁজা স্থানীয় কৃষকরাও সহজেই শ্রমিক পেয়ে যান। এই
শ্রমিকের হাটে কৃষক যেমন সহজে পেয়ে যান তার শ্রমিক তেমনি শ্রমিকও সহজে পেয়ে যান তার কাজ।