রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ০৪:১৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
বিগত সময়ের জনপ্রতিনিধিরা এখানে কোন ধরনের উন্নয়ন কর্মকান্ড করেননি-আখতারুল আলম ফারুক কেওয়াটখালী ব্রিজ প্রকল্পে নকশা পরিবর্তন ও দুর্নীতির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন মনিরুল ইসলামের ষোল লক্ষ ছেষট্টি হাজার আটশত নব্বই টাকা নিয়ে উধাও এরশাদ আলী নন্দীগ্রামের অদম্য মেধাবী খাদিজা খাতুন এখন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ফুলবাড়িয়ায় প্রবাসী পরিবার মানবিক সংগঠনের ঈদ পুনর্মিলনী উৎযাপন ফুলবাড়িয়ায় বিএনপির ঈদ পুনর্মিলনী ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন -মামুনুর রশিদ মামুন এদেশে কোন সংখ্যালঘু থাকবে না, আমরা সবাই বাংলাদেশী -অধ্যক্ষ মু.কামরুল হাসান মিলন বিএনপির পদ ব্যবহার করে কোন অবৈধ দাবি ও জনস্বার্থের বিরুদ্ধে যায়,তা মেনে নেবেন না -আখতারুল আলম ফারুক ফুলবাড়িয়ায় ঈদ উৎযাপন উপলক্ষে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ উদ্বোধন করেন -বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) সাইফুল ইসলাম বাদল ময়মনসিংহ মেডিকেল ঈদের ছুটিতে কেলেঙ্কারি ফাঁস ওয়ার্ডবয় আটক

কেওয়াটখালী ব্রিজ প্রকল্পে নকশা পরিবর্তন ও দুর্নীতির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

প্রতিবেদকের নাম : / ৮ বার দেখা হয়েছে
আপডেট : শনিবার, ১৪ জুন, ২০২৫

গোলাম কিবরিয়া পলাশ, ব্যুরো প্রধান ময়মনসিংহঃ

ময়মনসিংহের বহুল প্রতীক্ষিত কেওয়াটখালী আর্চ স্টিল ব্রিজ প্রকল্পে অনুমোদিত নকশা পরিবর্তন করে নির্মাণকাজ পরিচালনা, ভূমি অধিগ্রহণে অনিয়ম এবং অতিরিক্ত ব্যয়ের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয়ের অভিযোগ তুলেছে নাগরিক সংগঠন ‘ব্রহ্মপুত্র সুরক্ষা আন্দোলন’। শনিবার ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষ থেকে একনেক অনুমোদিত নকশায় সংযোগ সড়ক বাস্তবায়নসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও শাস্তির দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সমন্বয়ক আবুল কালাম আল আজাদ। বক্তব্যে তিনি বলেন, “একনেক অনুমোদিত মূল নকশা উপেক্ষা করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রকল্পের সংযোগ সড়কে পরিবর্তন আনা হয়েছে, যাতে কিছু প্রভাবশালী রিয়েল এস্টেট কোম্পানিকে সুবিধা দেওয়া হয়। এতে শুধু উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে না, প্রকল্প ব্যয়ও অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।”

তিনি জানান, ২০২১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর একনেক প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়। নকশা অনুযায়ী মূল ব্রিজের দৈর্ঘ্য ৩২০ মিটার এবং উভয় পাশে ৫.১ কিলোমিটার সংযোগ সড়কসহ মোট প্রকল্পের দৈর্ঘ্য ছিল ৬.২ কিলোমিটার। মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩,২৬৩ কোটি টাকা। তবে বাস্তবায়ন পর্যায়ে গিয়ে সংযোগ সড়ক বাড়িয়ে ৮.২ কিলোমিটার করা হয়েছে, যা একনেক অনুমোদনের বাইরে।

এছাড়া, ভূমি অধিগ্রহণের পরিমাণ ৮১.৫৬ একর থেকে বাড়িয়ে ১১৩ একরে উন্নীত করা হয়েছে, যার ফলে ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ অতিরিক্ত প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এই অতিরিক্ত জমির মালিকদের বড় একটি অংশ রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় এতে দুর্নীতির গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।

সংযোগ সড়কে নকশাবহির্ভূত ২.১ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের ফলে ছোট-বড় ব্রিজ, র‌্যাম্প, ওভারপাস নির্মাণের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। এতে করে কৃষিজমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় স্থাপনা ও বসতভিটা উচ্ছেদের পাশাপাশি পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলে প্রকল্প ব্যয় আরও ২,০০০ কোটি টাকা পর্যন্ত বাড়বে বলে মত প্রকাশ করেন ময়মনসিংহ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র ফয়সাল ফারনিম।

সংগঠনের সদস্য বিপ্লব নিভ বলেন, “এই সংযোগ সড়কটি যুক্ত করা হচ্ছে পুরাতন চায়না সেতু হাইওয়ের সঙ্গে। এতে করে যানজট কমার পরিবর্তে আরও বাড়বে এবং সড়কটি হবে দুর্ঘটনাপ্রবণ।” এমনিতেই ময়মনসিংহ বিশ্বের ৯ম ধীরগতির শহর, পরিবর্তিত নকশায় সংযোগ সড়ক বাস্তবায়ন হলে এটি বিশ্বের ধীরগতির ৫ম তালিকায় চলে আসতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রকল্পের নকশা পরিবর্তন ও দুর্নীতির অভিযোগে ময়মনসিংহ নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে গত ৪ জুন হাইকোর্টে জনস্বার্থে একটি রীট মামলা দায়ের করা হয়। আবুল কালাম আল আজাদ বনাম বাংলাদেশ সরকার ও অন্যান্য শিরোনামে দায়ের করা রীটে একনেক অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী কাজ পরিচালনার নির্দেশনা চেয়ে আদালত রুল জারি করেছেন।

প্রসঙ্গত, স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয় চার সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করলেও এখনও পর্যন্ত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে ব্রহ্মপুত্র সুরক্ষা আন্দোলনের পক্ষ থেকে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করা হয়—
১. একনেক অনুমোদিত মূল নকশা অনুযায়ী কেওয়াটখালী স্টিল আর্চ ব্রিজ নির্মাণ করতে হবে। ২. বিভিন্ন জনবহুল স্থানে অনুমোদিত মূল নকশা প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে। ৩. নকশা পরিবর্তনের পেছনে কারা জড়িত তা তদন্ত করে প্রকাশ করতে হবে। ৪. দুর্নীতিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ৫. প্রকল্প বাস্তবায়নে জনসাধারণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। ৬. তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সংযোগ সড়কের ভূমি অধিগ্রহণ ও নির্মাণ কাজ স্থগিত রাখতে হবে।

আবুল কালাম আল আজাদ বলেন, “আমরা স্টিল আর্চ ব্রিজের বিরুদ্ধে নই। বরং চাই দ্রুত, স্বচ্ছ ও জনস্বার্থসম্মতভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন হোক। যেন এটি ভবিষ্যতে ময়মনসিংহবাসীর জন্য অভিশাপ না হয়ে বরং কল্যাণ বয়ে আনে।” সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিক, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও ছাত্র প্রতিনিধি, পরিবেশবাদী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর...
এক ক্লিকে বিভাগের খবর

পুরাতন সব খবর