অম্বিকাগঞ্জ কলেজে উপবৃত্তির ফরম বিতরণে চলছে বানিজ্য ও দূর্নীতি

গোলাম কিবরিয়া পলাশ, ব্যুরো চিফ, ময়মনসিংহ
অর্থের অভাবে শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা, তাই সরকার উপবৃত্তি ফর্মে সুন্দর করে লিখে দিয়েছেন (শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) কর্তৃক আবেদন ফরম বিনামূল্যে বিতরণ করতে হবে) কিন্তু এটা ময়মনসিংহ সদর উপজেলা অম্বিকাগঞ্জ কলেজে ২০০ (দুইশত) টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে.। বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা শত শত প্রানের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন করলো ঠিকই কিন্তু দেশের দুর্নীতি দমন করতে পারলো না কেউ।
দেশে উপবৃত্তি প্রদানে শিক্ষার্থীদের সহায়তা করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তাই সারা দেশে প্রাথমিক থেকে শুরু করে ডিগ্রি পর্যন্ত শিক্ষার্থীকে এই উপবৃত্তির আওতায় আনা হয়েছে। তবে এসব উপবৃত্তি বিতরণে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির জন্য এর চরম ভুগান্তিতে পড়তে দেখা যায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের। এই দুর্নীতি আর স্বজনপ্রীতির মধ্যে বিভিন্ন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় প্রভাবশালী, এমনকি শিক্ষকরাও জড়িত থাকতে দেখা যায়। যে কারণে সরকারের এই উদ্যোগ চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।
এদিকে উপবৃত্তির টাকা নিয়ে এই দুর্নীতিতে গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদন আর ভুক্তভোগীদের করা শত শত অভিযোগ আমলে নিয়ে এবার টনক নেড়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কিছু অভিযোগ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে (মাউশি) এবং বাকিগুলো নিজস্ব সোর্সের মাধ্যমে তদন্ত করবে সংস্থাটি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহম আব্দুল জলিল সাহেবের হাতে গড়া অম্বিকাগঞ্জ মহাবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাহবুব হোসেন উপবৃত্তির ফরম বিতরণে চালাচ্ছেন বানিজ্য প্রতিটি ফরমে ২০০ করে টাকা নিচ্ছেন তিনি। উপবৃত্তি ফর্মে সুন্দর করে লেখা আছে (শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) কর্তৃক আবেদন ফরম বিনামূল্যে বিতরণ করতে হবে, কিন্তু সরকারী নির্দেশনার কোন তোয়াক্কা করেন না তিনি। নিচ্ছেন অতিরিক্ত টাকা।
অম্বিকাগঞ্জ কলেজের ছাত্র হাসিবুল হাসান জানান, আমি উপবৃত্তি ফরম পূরণ করেছি এখন জমা দিব, তাকে প্রতিবেদক প্রশ্ন করলে কোন টাকা লাগছে কি, তিনি সাথে সাথে বল্লেন ২০০ শত টাকা নিয়েছে এই ফরম এর জন্য।
কলেজের দাতা সদস্য প্রকৌশলী রাজিবুল আলম বিপ্লব জানান, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো যে সকল ছাত্র-ছাত্রী উপবৃত্তি পায় তাদের কাছ থেকে কোন বেতন নেওয়া যাবে না বা কৌশল করে অন্য কোন নামে টাকা নেওয়া যাবে না কারণ প্রতিটা উপবৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্র ছাত্রীর জন্য সরকার টিউশন ফি কলেজে দিয়ে থাকেন কিন্তু ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সরকারের নির্দেশনা না মেনে আমাদের এলাকার গরিব অসহায় সকল উপবৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে অন্যায়জনকভাবে প্রতিমাসে ৩০০ টাকা করে এবং প্রথম তিন মাসে ৫০০ টাকা করে জোরপূর্বক জমা নিতেছে এবং এই টাকাটা জমা না দিলে উপবৃত্তি দেওয়া হবে না বলে ছাত্র-ছাত্রীদের কে জানিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কলেজের সমস্ত টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার সরকারি নির্দেশনা থাকলেও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কোন টাকা পয়সা কলেজের ব্যাংক একাউন্টে জমা না রেখে মন মত খরচ করছেন। এই বিষয়ে কলেজের হিসাব রক্ষক রুহুল আমিন কে জিজ্ঞেস করা হলে উনি আমাকে উত্তর দেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের নির্দেশনায় কোন টাকা উনি কলেজের ব্যাংক একাউন্টে জমা রাখেন না।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে, কলেজের অধ্যক্ষ মাহবুব হোসেন বলেন, আসলে আমরা তো উপবৃত্তির ফরম বিতরণে টাকা নিচ্ছি না, এটা নিচ্ছি হলো উপকরণ ও আনুষাঙ্গিক খরচ হিসেবে। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় যে কলেজের ক্যাশকৃত টাকাগুলো কেন ব্যাংকে রাখা হয় না, তিনি বলেন আমার অফিসে আসেন সরাসরি কথা বলবো।