শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
সিরাজগঞ্জে ট্রাকের ধাক্কায় দুইজনের মৃত্যু সলঙ্গায় জুলাই যোদ্ধা ওসমান হাদির উপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত  সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি দিনাজপুরে আটক ধুবিল ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত সিংড়ায় প্রফেসর সাইদুর রহমানের পক্ষে জামায়াতের উঠান বৈঠক সলঙ্গায় বক পাখি অবমুক্ত করে মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ভোটের মাঠে ধানের শীষ প্রতীকে লড়বেন আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ সিংড়া ডিজিটাল অনলাইন প্রেস ক্লাবের নতুন কমিটি অনুমোদন; সভাপতি আবুল বাশার, সম্পাদক আমিনুল হক বৈষম্য ও জুলুমমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে আট দলের অঙ্গীকার : ময়মনসিংহে বিভাগীয় সমাবেশ সিরাজগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পেয়ে যা বললেন সেলিম রেজা

ময়মনসিংহে জেলা প্রশাসক প্রত্যাহারসহ চার দফা দাবিতে মাদ্রাসা শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম

প্রতিবেদকের নাম : / ২২ বার দেখা হয়েছে
আপডেট : মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৫

গোলাম কিবরিয়া পলাশ, ব্যুরো প্রধান, ময়মনসিংহঃ

ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলমকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার, ছাত্রদের ওপর হামলায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক বিচারসহ ৪ দফা দাবি আদায়ে আলটিমেটাম দিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন জামিয়া ফয়েজুর রহমান মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা।

একই সঙ্গে তারা ছাত্রদের ওপর হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তার, হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ‘মিথ্যা মামলা’ প্রত্যাহার এবং মাদ্রাসার একাডেমিক কার্যক্রমে নির্বিঘ্ন পরিবেশ নিশ্চিতসহ চার দফা দাবি উপস্থাপন করেছেন।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নগরীর বড় মসজিদ ক্যাম্পাসে অবস্থিত জামিয়া ফয়েজুর রহমান মাদ্রাসার মূল ফটকের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ১ হাজারের চেয়ে বেশি শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও এলাকাবাসী অংশ নেন।

চার দফা দাবি সমূহঃ- ১. ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলমকে অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। ২. মাদ্রাসা শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। ৩. হামলার পর মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের নামে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। ৪. মাদ্রাসার প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রমে কোনো প্রকার সরকারি হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম দীর্ঘদিন ধরে মাদ্রাসার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অযৌক্তিকভাবে হস্তক্ষেপ করে আসছেন। তিনি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও শিক্ষক সমাজের সঙ্গে বারবার অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন এবং মাদ্রাসা কমিটির সভাপতির পদে থেকে পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

তাদের দাবি, সম্প্রতি মাদ্রাসার এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওঠা স্পর্শকাতর অভিযোগের তদন্তেও জেলা প্রশাসক প্রকাশ্যে ওই শিক্ষকের পক্ষ নিয়েছেন, যা শিক্ষক সমাজে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দেয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা ও সমঝোতা হলেও রাতে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে হামলা চালায়। হামলায় হিফজ বিভাগের প্রধান শিক্ষক হাফেজ শহীদুল ইসলাম গুরুতর আহত হন এবং পরে তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ঘটনার পর সোমবার রাত ১০টার দিকে জেলা প্রশাসন মাদ্রাসায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী, র‍্যাব ও পুলিশের সদস্যরা রাতেই মাদ্রাসার পূর্ব গেটে মোতায়েন হন। তবে মঙ্গলবার সকালে মাদ্রাসা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অমান্য করে শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যান এবং বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দেন।

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে ডিসিকে প্রত্যাহার করো, শিক্ষকের রক্ত বৃথা যেতে দেব না, মাদ্রাসার স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখতে হবে, এমন নানা স্লোগান দেন।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন শিক্ষার্থী নেতা আজিজুল হক, শিক্ষক প্রতিনিধি মুফতি ওমর ফারুক ও বড় মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুল হক।

শিক্ষক নেতা মুফতি ওমর ফারুক বলেন, আমরা কারও শত্রু নই। আমরা শুধু ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াতে চাই। জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম একজন দায়িত্বশীল সরকারি কর্মকর্তা হয়েও পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন। তার এমন ভূমিকা মাদ্রাসার শান্ত পরিবেশ নষ্ট করেছে।

শিক্ষার্থী নেতা আজিজুল হক বলেন, আমাদের নিরীহ সহপাঠীদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা হয়েছে। যারা হামলার নেতৃত্ব দিয়েছে, তাদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না।

বড় মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুল হক বলেন, মাদ্রাসা ইসলামি শিক্ষার কেন্দ্র। এখানকার শিক্ষার্থীরা দেশের সম্পদ। তাদের সঙ্গে প্রশাসনের বৈরী আচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়। সরকার যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে।

আন্দোলনরত শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের চার দফা দাবি পূরণ না হলে তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাওসহ কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।

উল্লেখ্য, জামিয়া ফয়েজুর রহমান কওমি মাদ্রাসা ময়মনসিংহের অন্যতম বৃহৎ ইসলামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটি প্রশাসনিকভাবে জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হলেও সাম্প্রতিক ঘটনাবলির কারণে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর...
এক ক্লিকে বিভাগের খবর